নিজস্ব প্রতিবেদক:
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
প্রতিবছরের মতো এবারও কুমিল্লার গোমতী নদীতে শুরু হয়েছে পলো দিয়ে মাছ শিকার উৎসব। ফাল্গুন মাসে শীতের তীব্রতা আর উজানে পানি কমে এলে শৌখিন মাছ শিকারিরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে উৎসবে শামিল হয়। এবারও পাঁচ শতাধিক মাছ শিকারি একসঙ্গে নেমেছে গোমতী নদীতে। সাধারণত এ উৎসব দুই দিনের হয়।
মাছ পাওয়ার ওপর ভিত্তি করে মাঝে মাঝে তিন দিন পর্যন্তও চলে উৎসব।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শুরু হওয়া এই উৎসবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভারত সীমান্তে জিরো পয়েন্ট থেকে নদীতে নেমে হেঁটে এক দিনে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় চলেছে এই মাছ শিকার। পলো ছাড়াও ছিটা জাল, ঠেলা জালে মিলছে বড় বড় রুই, কাতল, বোয়াল, গজার,আইড়সহ টেংরা, বইচা, বাইম, কাঁচকিসহ নানা ধরনের ছোট মাছ। কারো পলো কিংবা জালে বড় মাছ ধরা পড়লেই হৈহৈ রবে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো নদী এলাকা।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর থেকে পলো নিয়ে মাছ ধরতে এসেছেন সত্তরোর্ধ্ব ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, ৪০ বছর ধরে তিনি এই উৎসবে অংশ নেন। মাছ না পেলেও দুঃখ নেই । উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য এই দিনটি দোকান বন্ধ রেখেছেন তিনি।
উপজেলার সদর এলাকা থেকে এসেছেন নাজমুল হাসান। পেশায় তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী। নাজমুল পেয়েছেন গজার আর বাইম মাছ। তিনি বলেন, ‘আমরা চার ভাই এসেছি মাছ ধরতে। বোয়াল আর কাতল মাছও পাওয়া গেছে।
গত বছর বন্যা হওয়ায় এ বছর মাছ বেশি পাওয়া গেছে।’
মাছ শিকারিদের প্রতিবছর একত্র করেন আবদুর রহিম সর্দার। সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা এলাকার বাসিন্দা রহিম নিজে একজন ড্রাইভার। তিনি বলেন, ‘গোমতী নদীতে পানি কমে এলেই আমরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে একটি দিন-তারিখ ঠিক করি। পরে একসঙ্গে নেমে পড়ি নদীতে। বেশির ভাগই পলো নিয়ে আসে মাছ ধরতে। কেউ কেউ জাল আনে।’
আবদুর রহিম আরো জানান, দিন দিন গোমতী নদী স্রোত হারাচ্ছে। শুকনা সময় পানি একেবারেই কমে যায়। ভারত থেকে কম পানি আসে। পানি না থাকলে মাছও থাকবে না। নদী না বাঁচলে উৎসবও বাঁচবে না।
মোবাইল: +৮৮০১৭১১৯৯৭৯৫৭
ইমেইল: sahabibcomilla@gmail.com
24newstv.tv