প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৭, ২০২৫, ১২:৩৮ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ১৩, ২০২৫, ১:০১ পূর্বাহ্ণ
বিগ বেনে ঘুরছে বাংলাদেশের রাজনীতির কাঁটা!

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি প্রতীক্ষিত বৈঠক। আগামীকাল শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনে ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে মিলিত হতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বৈঠক শুধু দুই ব্যক্তির আলোচনাই নয়, এটি হয়ে উঠেছে পুরো দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ।বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা, নির্বাচন নিয়ে জটিলতা এবং সরকার ও অন্যান্য দলের টানাপড়েনের মধ্যে এই বৈঠকটিকে ঘিরে জনমনে তৈরি হয়েছে প্রবল কৌতূহল।
আলোচনা এখন সর্বত্র—রাজপথ থেকে টক শো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত। অনেকেই বলছেন, এই বৈঠক একদিকে যেমন অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে পারে, তেমনি নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার পথও উন্মুক্ত করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, লন্ডনের বিগ বেনে বাংলাদেশের রাজনীতির কাঁটা কোন নতুন দিগন্তের দিকে মোড় নেয়।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এই বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আখ্যা দিয়েছেন।
তার মতে, নির্বাচন, সংস্কার এবং গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সুর শোনা গেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের কণ্ঠেও। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে চলমান ধোঁয়াশা কেটে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সচেতন মহলের কৌতূহলী দৃষ্টি লন্ডনের বিগ বেনের দিকে নিবদ্ধ।
কয়েক মাস ধরে বিএনপি বারবার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন সময়সীমা নির্ধারণে দেখা গেছে দ্বিধা ও টালবাহানা। কখনো বলা হয়েছে ডিসেম্বর, কখনো জুন, আবার কখনো তার পরেও ইঙ্গিত মিলেছে। ঈদুল আজহার আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস নির্বাচন এপ্রিলে আয়োজনের ঘোষণা দেন, যা বিএনপির হাইকমান্ডকে খানিকটা বিস্মিত ও অসন্তুষ্ট করে তোলে।এই প্রেক্ষাপটে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠক যেন এক মহার্ঘ মুহূর্ত।
সেখানে কী আলোচনা হবে? তারেক রহমান কি দেশে ফিরবেন? বিএনপি কি তাদের পূর্বঘোষিত অবস্থান থেকে সরে এসে একটি সমঝোতামূলক নির্বাচনে অংশ নেবে? নির্বাচন কি এপ্রিলেই হবে, নাকি নতুন কোনো দিন-তারিখ নির্ধারিত হবে? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজছে গোটা জাতি।কেউ কেউ বলছেন, এই বৈঠক শুধু নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়েই নয়, বরং বড় কোনো জাতীয় সমঝোতার ইঙ্গিতও দিতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে কখনো কিছুই স্থায়ী নয়। এখানে প্রতিটি মুহূর্তেই বদলে যেতে পারে দৃশ্যপট, পরিবর্তন হতে পারে জোট-সমীকরণ। তাই এই বৈঠককে নিছক এক সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই।বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম ইতোমধ্যে দাবি করছে, এই বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের দাবি উঠতে পারে, যা বিএনপি ও সরকারের মাঝে আপসের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। আর তা যদি সত্যি হয়, তবে তা হবে এক বড় ধরনের রাজনৈতিক অর্জন।
লন্ডনের বিগ বেনের সময় যেমন থেমে থাকে না, তেমনি রাজনীতির কাঁটাও স্থির নয়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বদলায় রাজনীতির হাওয়া, সরে যায় জটিলতার আবরণ। তাই এখন গোটা দেশের দৃষ্টি বিগ বেনের দিকেই। সেখান থেকেই হয়তো উঠে আসবে আগামী দিনের রাজনৈতিক রূপরেখা—যা বদলে দেবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
মোবাইল: +৮৮০১৭১১৯৯৭৯৫৭
ইমেইল: sahabibcomilla@gmail.com
24newstv.tv