বিগত তিনটি নির্বাচনে পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, গত তিনটি নির্বাচনকে যারা সার্টিফিকেট দিয়েছে, সেসব পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আর অনুমোদন দেওয়া হবে না। যেসব পর্যবেক্ষক নির্বাচন খুব সুন্দর হয়েছে সনদ দিয়েছে; গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলেছে, তাদের কী নেওয়া উচিত? যারা অভিজ্ঞ, নির্ভরশীল ও বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে তাদের নেব।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করার জন্য জিজ্ঞেস করেছি। নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউকে বলা হয়েছে, আগেই যেন জানিয়ে রাখা হয়। তাদের ২৮টি দেশের অবজারভারকে সমন্বয় করে পাঠাতে হবে, এ জন্য আগেভাগে স্বাগত জানিয়েছি।
আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রচারে এআইর অপব্যবহার রোধ করার কথা জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, এআইর অপব্যবহার আমাদের জন্যও হুমকির। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা। কারণ কানাডার গত বছরের নির্বাচনেও এটা মোকাবিলা করতে হয়েছে। অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কানাডার পরামর্শ চেয়েছি। এ বিষয়ে আমরাও বেশ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আত্মবিশ্বাসী।
কানাডার হাইকমিশনারের বৈঠকের আলোচনার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা বিস্তারিত জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশজুড়ে ভোটার সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, পর্যবেক্ষক ও এজেন্টদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কাজে কানাডা পাশে থাকার কথা জানিয়েছে।
নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সীমা বিষয়ে কানাডা হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, তিনি জানতে চেয়েছেন ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ হয়েছে কি না, আমি বলেছি না। সময়সীমা নিয়ে কোনও আলাপ হয়নি।
কানাডা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আমাদের ভোটার নিবন্ধনে নারীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। পার্বত্য এলাকায় ভোটার সচেতনতামূলক কাজের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন।
১৫ বছর ধরে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই
একইদিন বিকেলে নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফডি) আয়োজিত ফল উৎসব ও সাংবাদিক এক্সেস কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করেছি। এখন সময় এসেছে দায়িত্ব পালনের। এখন আমাদের বার্তা হবে- ভোট দিন, নাগরিক দায়িত্ব পালন করুন।
ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বারবার প্রমাণ করেছি- ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পেরেছিলাম। এবারও পারব।
নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ২০১৮ সালের মতো অভিযোগ আর যেন না ওঠে। প্রশাসন, পুলিশ, প্রিসাইডিং অফিসার ও সব কর্মকর্তাদের বলব- এটা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সময়। ভাবমূর্তি রক্ষা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ এখন এসেছে। প্রমাণ করুন- আমরাও পারি। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে যেমন পেরেছিলাম, এবারও পারব।
আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীন জেবেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল: +৮৮০১৭১১৯৯৭৯৫৭
ইমেইল: sahabibcomilla@gmail.com
24newstv.tv