দেবীদ্বারে জমিসংক্রান্ত বিরোধে হামলা ভাংচুর লুটপাট; থানায় মামলা
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
দেবীদ্বার উপজেলার মুগসাইর গ্রামে এক প্রবাসীর বাড়িতে গভীর রাতে হামলা চালিয়ে চার নারীকে গুরুতর আহত করেছে একদল দুর্বৃত্ত। শুধু তাই নয়, বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় সুযোগ নিয়ে হাঁটা-চলার একমাত্র রাস্তায় জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের চেষ্টা করে তারা। প্রতিবাদ করায় নারীদের ওপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, ১৬ নভেম্বর রাত ২টার দিকে মুগসাইর গ্রামের জয়নাল বাবুর্চীর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায় প্রতিবেশী সুলতান আহম্মেদ, রফিক, শাহ পরান, সাঈদুর রহমান, সাবিনা আক্তার, রমুজা আক্তার, নাছরিন আক্তার, পপি আক্তার, সামাদ মিয়া, সাম মিয়া, সাগর, সুমন, হারুন মিয়া, আক্তার মিয়া, বাবু, রুবেল, পারভীন আক্তার, আক্কাস, সেলিম, মোরশেদ, মিনুয়ারা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জন।
তারা আমির হোসেনের স্ত্রী সালমা আক্তার, বাহার মিয়ার স্ত্রী পপি আক্তার, জয়নালের স্ত্রী আকলিমা আক্তার ও শাহপরানের স্ত্রী সাহিদা আক্তারকে বেধড়ক মারধর করে। হামলাকারীরা নারীদের শ্লীলতাহানি করে, স্বর্ণালংকার লুটে নেয় এবং ঘরবাড়ি ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। আহতরা বর্তমানে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
ছালমা আক্তার জানান, “আমার শ্বশুরের মা আছমতের নেছা প্রায় ৫০ বছর পূর্বে সাফ কবলা দলিল মূলে জমিটি ক্রয় করেন। সেই জমিতে আমরা বসবাস করছি। কিন্তু সুলতান আহমেদ প্রভাব খাটিয়ে আমাদের হাঁটার রাস্তা বন্ধ করে জোরপূর্বক ঘর তুলতে চায়। প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর এই বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রবাসীর পরিবার। পুরুষ সদস্যরা বাইরে থাকায় আমাদের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে বারবার হামলা চালানো হচ্ছে। মামলা করেছি, কিন্তু এখন উল্টো আমাদেরই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একদিকে চলাচলের রাস্তা বন্ধ, অন্যদিকে হামলা ও মিথ্যা মামলার ভয়। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
হামলার ঘটনায় ছালমা আক্তার বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ০৭/২৫, তারিখ: ১৭/১২/২০২৫)। পরে ১৯ ডিসেম্বর কুমিল্লার সি.আর.পি.সি ১নং আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং পি আর- ৭৭৯/২৫)।
অভিযুক্ত সুলতান আহমেদের ছেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জায়গাটির প্রকৃত মালিক আমরা। আমরা চাই সঠিক তদন্ত হোক।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু তাহের ভূঁইয়া বলেন, “হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১১৯৯৭৯৫৭
ইমেইল: sahabibcomilla@gmail.com
24newstv.tv