কুমিল্লা জেলায় গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করনীয় শীর্ষক সমন্বয় সভা

কুমিল্লা জেলায় গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করনীয় শীর্ষক সমন্বয় সভা 
inside-post
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথকে সহজ করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম চলছে। এই প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্য হলো স্থানীয়ভাবে সহজে, কম খরচে, দ্রুত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিরোধ নিষ্পত্তি করা এবং অন্যায়ের প্রতিকার লাভের জন্য তৃণমূলের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষত নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
অদ্য ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সকাল ১০ টায় সার্কিট হাউজ, কুমিল্লা এর সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত প্রকল্পের ‘গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করনীয় শীর্ষক সমন্বয় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ আমিরুল কায়ছার, জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, কুমিল্লা।
সভায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে ০১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত কুমিল্লা জেলার গ্রাম আদালতের কার্যক্রম এর অর্জন, চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়। গত এক বছরে কুমিল্লা জেলার ১৯৩ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারের জন্য ৩৫৩৯ টি মামলার আবেদন করা হয়। যার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৮৮২ টি মামলা। এর মধ্যে ১১৯৬ টি মামলার আবেদনকারী নারী। এছাড়া, এক বছরে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে পাঁচ কোটি সাতান্ন লাখ পচাশি হাজার আটশত আশি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় পূর্বক আবেদনকারীদের হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলায় সবচেয়ে বেশি মামলা গ্রহণকারী দুইটি ইউনিয়ন পরিষদকে সম্মাননা পুরুষ্কার প্রদান করা হয়। শশীদল ইউনিয়ন,  ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ও ভাউকসার ইউনিয়ন, বরুড়া উপজেলা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনাব মোঃ আমিরুল কায়ছার, জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা বলেন, গ্রাম আদালত নিয়ে এর আগেও আমি আপনাদের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু আজ প্রথম কুমিল্লা জেলার সকল চেয়ারম্যানের এক সাথে গ্রাম আদালত নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। অনেক দিন থেকে আমি প্রকল্পের লোকদের বলছি চেয়ারম্যাদের প্রশিক্ষণ করানোর জন্য। আজ সবাই এক হয়েছেন। আজ এই সুযোগে সবাইকে গ্রাম আদালত বিষয়ে বিশেষ ধারণা দিয়ে দিতে হবে। আজ যারা প্রথম হয়েছে তাদের যে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে আমি চাই আগামীতে যেন সবাই সেটার দাবীদার হোক। গ্রাম আদালতের কার্যক্রম আরো গতিশীল করার জন্য সকলকে কাজ করতে হবে। তাহলে উচ্চ আদালতে মামলার চাপ কমবে। সভাপতি জনাব মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ, উপপরিচালক, স্থানী সরকার বলেন, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারলে উচ্চ আদালতের মামলার চাপ কমবে। আপনারা চেষ্টা করলে গ্রাম আদালত আরো সক্রিয় হবে। আমরা গত এক বছরে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি পুরোন আদায় করতে পেরেছি। এটা অনেক বড় অর্জন। এই অর্জনের দাবিদার আমরা সবাই। গত ছয় মাসে মামলা সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামীতে আরো ভালো কিছু করতে পারবো  এই বিশ্বাস আছে। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধি করবেন।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট; মেবেল সিলভীয়া রড্রিকস্, প্রজেক্ট এনালিস্ট, ইউএনডিপি; মালিহা সুলতানা, সহকারি কমিশনার; উপপরিচালক, যুব উন্নয়ন ও সমাজ সেবা অধিদপ্তর; সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণসহ গ্রাম আদালত প্রকল্পের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরো দেখুন