
জাকের আলীর চোট ও খালেদ মাসুদের অভিজ্ঞতা
যাক, এই প্রথম দলের গুরুত্বপূর্ণ কেউ কোনো একজনের সমস্যার কথা প্রকাশ্যে বললেন। এতদিন এটুকু ঘাটতির কথাও কেউ প্রকাশ্যে বলেননি। কথাবার্তা শুনে মনে হতো, সব ঠিক আছে, শুধু মাঠের খেলাটা ভালো হচ্ছে না! এই রাখঢাক নীতি বাংলাদেশ দলের জন্য ক্ষতিকর কি না, সেটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের নীতিনির্ধারক মহলে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে।
ডাম্বুলায় বসেও একটা দাবি জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। সেটি হলো, জাকের আলীকে কেন খেলানো হয়নি প্রথম টি-টোয়েন্টিতে? সিমন্স জানালেন, ‘জাকেরের চোট আছে। আর ওকে পাওয়া যায়নি বলেই চার ওপেনার খেলেছে। আর তো কোনো বিকল্প ছিল না।’ সত্যিই তো, ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিসংখ্যান ধরে টি-টোয়েন্টির স্কোয়াডে চার ওপেনার রেখেছে নির্বাচক কমিটি। মিডল অর্ডারে কোনো বিকল্প নেই!
তবে প্রধান কোচ আশা নিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছেন, ‘কাল পর্যন্ত জাকেরের জন্য অপেক্ষা করব।’ জাকের আলীর চোট নিয়েও গত দুই দিন ধরে নানা আলোচনা হচ্ছে। তার ঊরুর পেশিতে চোট। সেটি খুব মারাত্মক নয়। তবে এই চোট নিয়ে আউটফিল্ডে ফিল্ডিং করতে পারবেন না জাকের। খেলাতে হলে তার হাতে লিটন দাসের কিপিং গ্লাভস তুলে দিতে হবে। মানে, তিনি উইকেট-কিপার ব্যাটার হিসেবে খেলতে পারেন।
একজন খেলোয়াড় পুরোপুরি ফিট নন, তাই ফিল্ডিং করতে পারবেন না কিন্তু উইকেটকিপিং করতে সমস্যা নেই! এ আলোচনার প্রসঙ্গ তুলতে টেলিফোনের ওপ্রান্ত থেকে একটু হতাশই শোনালো জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটকে, ‘যে ফিল্ডিং করতে পারবে না, তার পক্ষে উইকেটকিপিং আরো কঠিন। আমি নিজে দীর্ঘদিন কাজটা করেছি বলে জানি। ইনিংসের প্রতিটা বলে আপনাকে শুধু উঠ-বস করা না, ঝাঁপাতে হবে, কখনো কখনো দৌড়াতেও হবে। আমি জানি না, কেন এমন কথাবার্তা হচ্ছে!’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবশ্য এমন ‘কথাবার্তা’ নতুন কিছু নয়। একবার বিসিবির চিকিৎসক ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন, পায়ের হাড়ে ব্যথার কারণে ৪ ওভারের বেশি বোলিং করতে পারবেন না সাকিব আল হাসান। তাই জাতীয় দলের হয়ে আপাতত খেলতে পারবেন না। সঙ্গে সঙ্গে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, সামনেই ভিনদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর রয়েছে। সে কারণেই কী এমন প্রেসক্রিপশন আদায় করে নিয়েছেন সাকিব?
এই আলোচনার সূত্র ধরে মাসুদ ফিরে যান তার খেলোয়াড়ি জীবনে, ‘আমাদের সময়ে (জন) গ্লাস্টার ফিজিও ছিল। ওর কাছে চোট নিয়ে লুকোচুরি করা যেত না। ছোটখাট ইনজুরি হলে জোর করে মাঠে নামিয়ে দিত (হাসি)!’ তার মতে, ‘একজন খেলোয়াড়ই সবচেয়ে ভালো জানে তার ব্যথা কতটুকু। ব্যথা কম না বেশি, সেটা খেলোয়াড় জানাবে। এরপর ফিজিও সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে ছোটখাট চোটের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়ের।’
অবশ্য নিজের অধিনায়কত্বকালে উইকেটকিপিং করার মতো ফিট খেলোয়াড়কে খেলাতেন কি না, এমন প্রশ্নে মাসুদের সাফ জবাব, ‘প্রশ্নই আসে না। যে আউটফিল্ডে ফিল্ডিং করতে পারবে না বলছে, সে কিভাবে কিপিং করবে? এটা হয় না।’ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগের প্র্যাকটিস দেখে অবশ্য কিপিং করার শর্তেই শুধু ফিট জাকের আলী, তা মনে হয়নি। উঁচু ক্যাচ অনুশীলন করেছেন তিনি।
