অন্তঃকোন্দলের কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে- ডা. এম এম হাসান

অন্তঃকোন্দলের কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে- ডা. এম এম হাসান

কুমিল্লা প্রতিনিধি :২৬
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ড্যাব কুমিল্লার সদ্য সাবেক সভাপতি ডা. এম এম হাসানকে জড়িয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়েছেন ডা. এম এম হাসান নিজেই। তিনি কুমিল্লার জমিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটি ছিল উদ্দেশ্যমূলক। এ ধরনের কোনো কাজে আমি কখনোই জড়িত ছিলাম না, জড়িত হওয়ার সুযোগও নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকব না। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আমি ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর রাজনীতি করি এবং গত ১৭ বছর ধরে ড্যাবের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কৌশলও অবলম্বন করেছি। বিএনপি’র যখন
ক্রান্তিলগ্ন ছিল, বিশেষ করে ৫ আগস্টের আগে, তখন ড্যাবকে আমি পরিপূর্ণ সমর্থন দিয়েছি। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের আন্দোলনের সময় আমার হাসপাতালে ও বাড়িতে প্রায় ৩০০ জনের বেশি বিএনপি নেতাকর্মী ও ডাক্তার ছিলেন। সে সময় আমরা অনেক ঝুঁকি নিয়েও বিএনপি’র জন্য কাজ করেছি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর প্রেক্ষাপট পরিবর্তিত হলে এবং গত ৯ আগস্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ড্যাব সংস্কারের একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে একটি ভালো অবস্থানে রাখার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
এ নিয়েই মূলত একটি কোন্দল শুরু হয়। এর মধ্যেই আমার খুব কাছের একজন সহচর, যিনি দীর্ঘদিন আমার সাথে ছিলেন, তার কিছু ব্যাপারে আমার কাছে আপত্তি ও অভিযোগ ছিল। আমি তখন তাকে কিছু বলিনি, কারণ আমি চাইনি আমার কোনো কর্মী আমার কথার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হোক। শুধু সতর্ক করেছিলাম এবং নিজের অবস্থান থেকে
তাকে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক এক মিটিংয়ে সে বলেছে, আমরা তাকে বের করে দিয়েছি। আসল কথা হলো, আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের
অবশ্যই একটি নীতির মধ্যে থেকে চলতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে নীতি অবলম্বনের কথা বলেছেন, আমাদের
সেটি ধারণ করতে হবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর অনেকে ভেবেছে বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসছে। তখন অনেকেই নিজেদের অবস্থান তৈরি করার জন্য আরিফ হায়দারকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, যাতে আমি কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে না আসতে পারি বা তারা নিজেদের ভালো অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে। মূলত এই কারণেই তারা সংবাদ সম্মেলন করেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি,
রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু
প্রতিবাদ সভা করা বা সাংবাদিকদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন করা দলকে কখনোই উপকৃত করবে না। বরং এটি অসংগঠনিক কাজ। এ বিষয়ে তারা চাইলে কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে কথা বলতে পারত। যদিও আমি স্পষ্টভাবে বলেছি আমি এসবের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। ডা. হাসান বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ার বিষয়টি নিয়েও বলা হচ্ছে। কিন্তু যে কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া একজনের হাতে কখনোই হয় না। এখানে প্রায় ১০ থেকে ১২ জন ডাক্তার থাকেন এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সিনিয়র প্রফেসররাও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন। আমি সেখানে কেবল একজন সদস্য মাত্র। পুরো প্রক্রিয়ায় আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই। আমি দৃঢ় ভাবে বলতে চাই, এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আমি সুনামের সঙ্গে কুমিল্লায় চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার সুনাম নষ্ট করা এবং আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য কিছু ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তবে আমি বিশ্বাস করি তারা কখনোই সফল হবে না। আশা করি, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্যটি প্রকাশ করবেন।
সবশেষে তিনি বলেন, এটিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আমাদের তিনটি কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি কেন্দ্র কখনোই ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না। কেন্দ্রের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমি বিএনপি কে ভালোবাসি ও দেশকে ভালোবাসি এবং ৫ আগস্টের চেতনাকে ধারণ করি। সত্যের জয় হবেই।