খাগড়াছড়িতে হতাহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি টিআইবির

খাগড়াছড়িতে হতাহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি টিআইবির

 অনলাইন ডেস্ক

শেয়ার

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে ১২ বছরের কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে চলা আন্দোলনে ব্যাপক সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশ্বব‍্যাপী শান্তিরক্ষায় প্রশংসার দাবিদার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাস্তব কর্তৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে ১২ বছর বয়সী আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক সহিংসরূপ দেওয়ার প্রেক্ষিতে ব‍্যাপক সহিংসতা ও বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী একাধিক নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

এতে বলা হয়, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গত একবছরে এই জেলায় সাতজন আদিবাসী নারী ধর্ষণের শিকার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ঘটনার বিচার হয়নি। এমতাবস্থায় পুনরায় কিশোরীকে বর্বরোচিত ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ন্যায়বিচারের দাবিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যৌক্তিক আন্দোলন কি অপরাধ?’

একই সঙ্গে ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসরূপ দিতে যারা জড়িত এবং যেসব কুশীলব ভূমিকা পালন করেছে, তাদের খুঁজে বের করাসহ এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছে টিআইবি।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আদিবাসী নারীদের ধর্ষণের ঘটনাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখানোর প্রচেষ্টা নতুন নয়। মূলত সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বাধীন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কেন এ সহিংসতা প্রতিরোধ করতে যথাসময়ে সক্রিয় ও কার্যকর কৌশল অবলম্বন করতে পারল না; এটি কি স্বার্থান্বেষী মহলের ধ্বংসাত্মক ষড়যন্ত্রের প্রতি উদাসীনতা না যোগসাজশ? যার ফলে পরিকল্পিতভাবে আদিবাসীদের অধিকারহরণ ও জাতিগত অবদমন প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রূপ দেওয়া হচ্ছে? ধর্ষণের শিকার নারীদের স্বাস্থ‍্যপরীক্ষা থেকে শুরু করে মামলাগ্রহণসহ পুরো বিচার-প্রক্রিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্ষককে রক্ষার প্রচেষ্টা দেখা যায়।

এমতাবস্থায় ন্যায়বিচার না পাওয়ার শঙ্কা থেকে আদিবাসীদের চলমান আন্দোলন খুবই যৌক্তিক ঘটনা। প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে সংবেদনশীল আচরণ কাম্য ছিল।’ 

আদবিাসী জনগোষ্ঠীর এদেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান স্বীকৃত সুরক্ষিত ও নিরাপদ জীবনযাপনের অধিকার আছে উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বৈষম্য ও গোষ্ঠীগত নিপীড়নমূলক চর্চার ঊর্ধ্বে উঠে ধর্ষণসহ সব সংহিস ঘটনায় নিহতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এ জাতীয় ঘটনার পুরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব নয়।

একই সঙ্গে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের ব্যর্থতাও দৃশ্যমান।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের সক্ষমতা মূলত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তিরক্ষায় সুনাম অর্জনকারীর দাবিদার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে। আশা করছি সেনাবাহিনী এই সক্ষমতার সময়োপযোগী ইতিবাচক সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে এ অঞ্চলে আদিবাসীদের অধিকারভিত্তিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন‍্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রশংসনীয় অর্জনের সমতুল্য ভূমিকা পালনে সচেষ্ট হবে।’

inside-post
আরো দেখুন